ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ গুলো একসাথে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়গুলো একসাথে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২৫% এবং সাধারণ জনসংখ্যার ৮% যোগ করে। তবুও, তারা পিছিয়ে রয়েছে কারণ তারা তাদের পণ্য বিপণন থেকে শুরু করে, মূলধনের অভাব, ব্যবসায় পরিচালনার দক্ষতা, অনুন্নত বিক্রয় চ্যানেল এবং নিম্ন স্তরের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।

সেবা প্ল্যাটফর্ম লিমিটেড (SPL), নগর জীবনযাত্রায় প্রয়োজনীয় পরিসেবাদানকারী প্ল্যাটফর্ম Sheba.xyz এর পর ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য sManager নামে একটি মোবাইল অ্যাপ নিয়ে আসে, যা দিয়ে একটি ব্যবসা পরিচালনা করতে যা যা প্রয়োজন, সবই করা যায়। ব্যবসায়ের প্রতিদিনের লেনদেন, বাকির হিসাব, মালামালের ইনভেন্টরি থেকে শুরু করে কিস্তিতে পণ্য বিক্রয়, লোনের আবেদন, বাড়তি আয় সবকিছুই আছে এই অ্যাপে।  এই ডিজিটাল সমাধানটি মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় পরিচালনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যেখানে বেশিরভাগ উদ্যোক্তা প্রতিদিনই অনেক রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। এপর্যন্ত ৪ লাখেরও বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী এই অ্যাপটির মাধ্যমে নিজেদের ব্যবসা পরিচালনা করছে এবং এই সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

“ব্যবসা করতে যেয়ে আমি সবচেয়ে বেশি যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, তা হল প্রতিদিনের লেনদেনের জন্য একটি রেজিস্ট্রি খাতা মেইনটেইন করা। প্রতিদিন দোকানে সারাদিন কাজ করার পর দিন শেষে আবার খাতায় হিসাব করা তখন একটা বড় ঝামেলার কাজ বলে মনে হত। আমার দোকানে বিশ্বাসযোগ্য কর্মচারী থাকলেও আর  সব মালামাল তালিকা অনুযায়ী সাজানো থাকলেও একটা গড়মিলের ভয় থেকেই যেত। কয়টি পণ্য বিক্রি হয় এবং কতটি মজুদ থাকে তা ট্র্যাক করে রাখাটাও একটা চ্যালেঞ্জ  ছিল। ধরুন, আমি মাসের প্রথম দিকে আমার ব্যবসায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছি, তবে আমি মাস শেষে কত টাকা লাভ করেছি বা আমার ব্যবসায় কত উন্নতি হয়েছে, তা বোঝা আমার পক্ষে কঠিন ছিল। স্পষ্টতই, এস ম্যানেজার এই জিনিসগুলি আমার পক্ষে খুব সহজ করে তুলেছে। আমি এখন আমার ফোন থেকে আমার ব্যবসার সমস্ত কিছু দেখতে এবং ট্র্যাক করতে পারি। আমি কোন মাসে কত লাভ হল তা দেখতে পারি, আবার কত টাকা পরের মাসে বিনিয়োগ করব বা করা উচিৎ, তারও একটা ধারণা পাই। আমার মতো ব্যবসায়ীদের জন্য এটা এক কথায় একটা আশির্বাদ। এজন্য আমি এখন আমার সকল ব্যবসায়ী বন্ধুদেরও এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়ে থাকি।” কথাগুলো বলছিলেন মোঃ রাসেল, অটোমার্ট বিডি এর স্বত্তাধিকারী। তিনি প্রায় এক বছর ধরে sManager ব্যবহার করছেন এবং sManager ব্যবহার করে তিনি বেশ সন্তুষ্ট।

মোঃ রাসেলের মতই, এস-ম্যানেজারের আরেকজন নিয়মিত ব্যবহারকারী মোঃ ইমরান, মিরপুর-১০ এর ইফতি টেলিকমের মালিক। তিনি মূলত মোবাইল ফোন, স্পিকার, হেডফোন, ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট এবং এক্সেসরিজ বিক্রি করে থাকেন। তিনি গত 6 মাস ধরে এস-ম্যানেজার ব্যবহার করছেন এবং পেমেন্ট সংগ্রহের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত ফলাফল পেয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে তার পেমেন্ট কালেকশন নিয়ে নানা রকমের ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। অনেকবার এমন হয়েছে যে তার ক্লায়েন্টকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে কিস্তিতে পণ্য বিক্রয়ের সুবিধা না থাকায়। তবে এখন তিনি তার গ্রাহকদের কিস্তির সুবিধা দিতে পারেন এবং এটি তার ব্যবসায়ের উন্নতিতে অনেক সাহায্য করেছে। এখন তিনি সহজেই তার ফোন থেকে এস-ম্যানেজার ব্যবহার করে কিস্তিতে পণ্যের মূল্য পরিশোধের সুবিধা দিতে পারেন এবং এজন্য এখন আর তার গ্রাহকদের আর ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে না। এই সুবিধার জন্য মোঃ ইমরান এস-ম্যানেজারের কাছে নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মোঃ রাসেল ও মোঃ ইমরানের মত আরও অনেক ব্যবসায়ীর জীবনেই এস-ম্যানেজার নানাভাবে অবদান রেখে আসছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় গুলোকে ডিজিটাল লোন, কিস্তি, ডিজিটাল কালেকশন এই ফিচার গুলো কোভিড-১৯ এর মধ্যে ব্যবসাগুলোকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছে।  ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় গুলোর পারস্পরিক বৃদ্ধি এবং অগ্রগতি নিশ্চিত করতে এস-ম্যানেজার যেই বাণিজ্যিক বাস্তুসংস্থান তৈরি করেছে, তা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

Leave a comment