ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং-এর ১০ টি কলা-কৌশল
ব্র্যান্ডিং হচ্ছে পণ্য এবং সেবার প্রতি কাস্টমারের ধারণা, আস্থা, বিশ্বাস বা অনুভূতি। অর্থাৎ, কোনো ব্র্যান্ডের নাম, পণ্য ও সেবা সম্পর্কিত কোনো বিষয় কাস্টমারের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর কাস্টমার সেই ব্র্যান্ড সম্পর্কে নিজের মনে কীভাবে সেটাকে গেঁথে রাখে সেটাই হচ্ছে ব্র্যান্ডিং। আর ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং হচ্ছে ব্র্যান্ডিংকে শুধুমাত্র অফলাইনে না রেখে অনলাইনেও নিয়ে আসার প্রক্রিয়া। ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং মূলত ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল মার্কেটিং ভিত্তিক একটি ব্র্যান্ডিং যেখানে কাস্টমারদের মনে ব্র্যান্ড সম্পর্কে ভালো ধারণা তৈরি করে তাদের সঙ্গে অনলাইনে একটি সুসম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করা। বর্তমান সময়ে উদ্যোক্তারা ক্ষুদ্র পরিসরে নতুন এবং ইউনিক পণ্য ও সেবা নিয়ে হাজির হচ্ছে মানুষের দোরগোড়ায়। যেমন: sheba.xyz., chaldal.com ইত্যাদি।
তাহলে এখন আলোচনা করা যাক কীভাবে ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং-এর ১০ টি কলা-কৌশলগুলো কাজে লাগিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে উন্নতি করা যায়।
১। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং:
ফেইসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম-এর সুবাদে এমন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের নাম নজরে আসে যেগুলোর নাম বাস্তব জীবনে খুব কমই শোনা যায়। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কল্যাণে অনলাইনে সেসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের নামডাক খুব জোরেশোরেই হয়। আর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আলাদা করে অফলাইনে কোনো বিজ্ঞাপন দেয়ার প্রয়োজন পরেনা।
২। রিটেইল মিডিয়া:
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের প্রচার এবং প্রসার নির্দিষ্ট কমিশনের বিনিময়ে বিভিন্ন রিটেইল মিডিয়ার মাধ্যমে করতে পারেন। এটার ফলে, তাদের বিজ্ঞাপন খরচটাও বাঁচবে আবার পণ্য ও সেবার বিক্রয়ও বাড়বে। যেমন: দারাজ, আলী এক্সপ্রেসের মাধ্যমে খুচরা ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য বিক্রয় করতে পারে।
৩। এফিলিয়েট মার্কেটিং:
যেহেতু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের বাজেট কম সেহেতু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চাইলেই অল্প খরচে তাদের পণ্যের প্রচারণার কাজটি বিভিন্ন ব্লগারের ব্লগ পোস্টিং এবং ইউটিউবারদের ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সেরে নিতে পারেন। এই পদ্ধতিটি এফিলিয়েট মার্কেটিং নামে পরিচিত।
৪। ডিসপ্লে এডভার্টাইজিং:
ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং এর অন্যতম একটি হাতিয়ার যেটির মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট, অ্যাপ অথবা সোশ্যাল মিডিয়ার ফ্রি স্পেস গুলো রেন্ট করে তাদের ব্র্যান্ড, পণ্য এবং সেবা সম্পর্কিত তথ্যাবলী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন।
৫। ই-মেইল মার্কেটিং:
সম্ভাব্য ক্রেতা বা যাদের কাছে ব্যবসায়ের পণ্য ও সেবা প্রাধান্য পেতে পারে এমন ব্যক্তিবর্গের ই-মেইল আইডি বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করে তাদের কাছে পণ্য ও সেবার বিস্তারিত তথ্য প্রেরণ করেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের উন্নতি সাধন করা যেতে পারে।
৬। অনলাইনে পাবলিক রিলেশনশিপ:
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজস্ব পেইজ অথবা গ্রুপ খোলার মাধ্যমে কাস্টমারদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা যায়। টাইম-টু-টাইম পণ্য ও সেবা সম্পর্কিত তথ্যাবলি গ্রাহকদের জানিয়ে এবং সর্বোচ্চ সেবা মান নিশ্চিত করে পার্সোনাল রিলেশনশিপকে মজবুত করা যেতে পারে। আর আমরা জানি যে, পাবলিক রিলেশন্স হচ্ছে এমন একটা বিষয় যার মাধ্যমে একজন কাস্টমার লয়্যাল কাস্টমারে পরিণত করা সম্ভব।
৭। ভিডিও এডভার্টাইজিং:
ফেইসবুক, টুইটার অথবা ইন্সটাগ্রাম-এ ভিডিও শেয়ারিং অন্যতম একটি ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং টুল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিতি পেয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীবৃন্দ তাদের পণ্য ও সেবা সম্পর্কিত তথ্য খুব স্বল্প সময়ের ভিডিও এডভার্টাইজমেন্ট-এর মাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন।
৮। এসএমএস মার্কেটিং:
গ্রাহকদের ফোনে পণ্য ও সেবা সম্পর্কিত তথ্যাবলি এসএমএস প্রদানপূর্বক তাদেরকে পণ্য ও সেবা সম্পর্কে সবসময় আপডেইটেড রাখা যেতে পারে।
৯। নিজস্ব ওয়েবসাইট:
নিজস্ব ব্র্যান্ডের নামে ওয়েবসাইট একটি কার্যকরী ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং টুল। গ্রাহক যখন তথ্যসমৃদ্ধ একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নিজের পছন্দ মতো পণ্য ও সেবা কেনাকাটার সুবিধা, সুন্দর চেক আউট ব্যবস্থা, সময়মতো ডেলিভারি এবং উত্তম সেবা পাবে তখনই সেই ব্যবসা সম্পর্কে গ্রাহকের মনে পজিটিভ একটি ধারণা তৈরি হবে। এ কারণেই, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচিৎ নিজস্ব ওয়েবসাইট যত দ্রুত সম্ভব তৈরি করে ফেলা।
১০। সৃজনশীলতা:
সৃজনশীল হতে হবে। আধুনিক প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে শুধু ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং এর ব্যবহার জানলেই চলবেনা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে অবশ্যই ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহারে সৃজনশীল হতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, ক্ষুদ্র মূলধন ও স্বল্প পরিসের ব্যবসায়ের প্রচলন পূর্বেও ছিল, কিন্তু আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে অন্যান্য বড় বড় ব্যবসায়ের সঙ্গে ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোও ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং-এ প্রবেশের মাধ্যমে অনলাইন জগতে তাদের ফুট-প্রিন্ট রাখছে। আর এই কথা অনস্বীকার্য যে, ইন্টারনেট বেইজড ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং ছাড়া এই সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের টিকে থাকাটাও দুষ্কর। কারণ, স্মার্টফোনের যুগে মানুষ অনলাইনেই বেশীরভাগ সময় কাটিয়ে থাকে। আর তাদের কাছে ডিজিটাল ব্র্যান্ডিং এর মাধ্যমেই পৌঁছানো সম্ভব।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ের ডিজিটাল সল্যুশন দিয়ে থাকে sManager বিজনেস সল্যুশন অ্যাপ।
অ্যাপটি সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন
ফেসবুক পেজ লিংক: https://www.facebook.com/sManager/
ফেসবুক কমিউনিটি লিংক: https://www.facebook.com/groups/692792341254749/
অ্যাপ ডাউনলোড লিংক: https://cutt.ly/sManagerApp
বিস্তারিত জানতে কল করুন ১৬৫১৬